বাঁচার তাগিদে উত্তরপ্রদেশ থেকে সাইকেল চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানে এল ৫ শ্রমিক

13th May 2020 বর্ধমান
বাঁচার তাগিদে উত্তরপ্রদেশ থেকে সাইকেল চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানে এল ৫ শ্রমিক


অভিষেক চৌধুরী ( মন্তেশ্বর ) :  পেটের টান ও বাঁচার তাগিদেউত্তরপ্রদেশ থেকে  সাইকেল চালিয়ে পূর্ব বর্ধমানে এলো পাঁচ শ্রমিক। লক ডাউনের জেরে কাজ বন্ধ থাকায় পকেটে টান পড়তেই সূদূর উত্তরপ্রদেশ থেকে টানা সাতদিন ধরে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরলো পূর্ব বর্ধমানের পাঁচজন শ্রমিক।স্থানীয় ও পুলিশসূত্রে জানা যায় যে, মন্তেশ্বর থানায় হঠাৎই হাজির হোন উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তি।সঙ্গে ছিলো একটি সাইকেল ও একটি ব্যাগ।এরপরেই ওই ব্যক্তি জানান যে,তার নাম গৌরাঙ্গ মন্ডল।তার বাড়ি মন্তেশ্বর গ্রামেরই ধাওড়াপাড়ায়।পুলিশ এরপর তার কাছ থেকেই জানতে পারে যে মন্তেশ্বরের সুটরার আরো দুই বাসিন্দা ও শ্রমিক পলাশ ওঁরাও ও চন্দন সেখ তারাও সাইকেলে করে আসে তার সঙ্গেই।সঙ্গে ছিলো নাদনঘাট থানা এলাকার কোরাপুরের আরো দুই বাসিন্দা সন্জয় ঘোষ ও সুচাঁদ ঘোষ।রাত জেগে সাতদিন ধরে সাইকেল চালিয়ে কি কারণে তারা বাড়ি ফিরে এসেছে পুলিশকে সেই করুণ অভিজ্ঞতার কথা শোনায় তেতাল্লিশ বছর বয়সী গৌরাঙ্গ মন্ডল।সারা শরীরে তখন তার ক্লান্তির ছাপ ষ্পষ্ট আর চোখেমুখে করোনার যেন আতঙ্ক তাকে গ্রাস করছে।আর সেই পরিস্থিতির কথা বুঝেই সঙ্গে-সঙ্গে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ স্থানীয় হাসপাতালে তার পরীক্ষা করেই কুসুমগ্রাম কোয়ারান্টাইনে রেখে তার খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।এরপর সুটরার আরো দুই বাসিন্দা পলাশ ওঁরাও ও চন্দন সেখকে ওই কোয়ারান্টাইনে নিয়ে আসা হয়।মঙ্গলবার আরো একবার পরীক্ষা করার জন্য তাদের কালনা সুপার ষ্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষাও করানো হয়।উত্তরপ্রদেশের মেনপুরি জেলার বেবোর থানা এলাকা থেকে সাতদিন ধরে পাঁচজন একসঙ্গে সাইকেলে করে আসার করুণ কাহিনীকে তুলে ধরতে গিয়ে গৌরাঙ্গ মন্ডল বলেন,‘উত্তরপ্রদেশের ওখানে আমরা প্যান্ট ও শার্ট কিনে ফেরিগিরি করে বিক্রি করতাম।সব মিলিয়ে দশ-বারো হাজার টাকা আয়ও হোতো।লকডাউনের জেরে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।পকেটের টাকাও শেষ হয়ে যায়।।এক বন্ধুর কাছ থেকে দু হাজার টাকা ধারও করি।বাড়ি ভাড়া ও পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার না জোটার কারণে পরিস্থিতি বেগতিক বুঝি।ট্রেনও চলছে না।এই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদেই সাইকেলে করে বাড়ি আসার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলি পাঁচজনেই।আর তারপরেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ি আমরা।রাতের দিকেই সাইকেলটা বেশি চালাতাম।রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় খাবারও পাই।কিন্তু এখন আমরা খুবই ক্লান্ত।এখানে আসার পরেই পুলিশ-প্রশাসন আমাদের ভীষণ সহযোগিতা করেছেন।’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।